• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৪১ অপরাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ সুষ্ঠ ভোটে ডিজিটাল পদ্ধতি দরকার  অভয়নগরে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বাস্তবায়ন ও মনিটরিং সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ অভয়নগরে সরকারীভাবে ধান চাল সংগ্রহের উদ্বোধন অভয়নগরে মেধা অন্বেষন ও কুইজ প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত অভয়নগরে দুদক কর্তৃক সততা স্টোরের অর্থ ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ আশুলিয়া টু চান্দুরা চৌরাস্তা যানজটের দুর্ভোগ,,,  অভয়নগরে মাধ্যমিক পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধানকে সংবর্ধনা যশোর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)অভিযান চালিয়ে ৪ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার সহ আটক -১ অভয়নগরে পায়রাহাট ইউনাইটেড কলেজ শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি অর্জনে আনন্দ শোভাযাত্রা নড়াইলের ইউপি চেয়ারম্যান  মোস্তফা কামাল’কে গুলি করে হত্যাকান্ডের ঘটনায় আটক -৪ সুষ্ঠ ভোটে ডিজিটাল পদ্ধতি দরকার আশুলিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় ছয় জনের মরদেহ উদ্ধার ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যা বললেন মামুনুল হক যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ খেলা হচ্ছে না তাসকিনের, বিকল্প ভাবনায় হাসান দুই সিনেমা নিয়ে ফিরছেন আফরান নিশো

বই পরিচিতি ও সমালোচনা

এখন থেকে নতুন লেখক/ লেখিকাদের “বই পরিচিতি” বিভাগে বই নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবে। যাতে করে নতুনরা একটু ঠাই করে নিতে পারেন সর্ব সাধরণের হৃদয়ে। আজ থাকছে ডাঃ মুহসিনা রচিত কাব্যগ্রন্থ “চন্দ্রভুক” নিয়ে বই পরিচিতি ও সমালোচনা।
সমালোচনা করছেন কবি শাহ কামাল সবুজ

চন্দ্রভুক
কবি : ডা, মুহসিনা
প্রথম প্রকাশ- ২০২১
শিকড় প্রকাশনী
বাংলাবাজার। মূল্য : ২২৫ টাকা।

ট্যাবলয়েড আকারে এ কাব্যগ্রন্থটিতে কবি, ডাঃ মুহসিনার ৭৯ টি কবিতার সংযুক্তি রয়েছে। তার কবিতার বক্তব্য স্পষ্ট। বইটি পড়লে যে কেউ বুঝবেন এটি তার প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ হলেও কবিতায় কবির হাত যথেষ্ট দক্ষ ও পাকা। তার লেখায় ফুটে উঠেছে সমাজ ও মানুষের চরিত্রের বিভিন্ন অসঙ্গতি, সৃষ্টির প্রতি মমত্ববোধ, প্রতিবাদ আর কখনো কখনো দ্রোহের আগুন। কবি তার “নয়া বীরাঙ্গনা” কবিতায় লিখেছেন, “পঞ্চাশ বছর তুমি এলেনা/তোমার পুত্রবধু আর আঠারো বছরের নাতনী/মা, মেয়ে একসাথে ধর্ষিতা হলো নয়া বীরাঙ্গনা/দুটো এক সাথে বিষ খেলো, জয় বাংলা,,,।” এখানে অসাধারণ এক বাস্তবতা আছে যে কারো হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। দ্রোহের আগুন স্পর্শ করবে। সমাজের অসঙ্গতি ও মানুষের নানান অপকর্মের দিক কবিকে খুব কষ্ট দেয়। যেমন কবি তার “যুব সমাজ” কবিতায় তুলে ধরেছেন, “মাদক, পর্ণোগ্রাফি আলু পটলের চেয়ে সহজ/নেশায় বুদ বাস চালক, বস্তির মাস্তান কিংবা/বেকার যুবক,,,” একেবারেই চলমান ঘটনা গুলোর বর্ননা করেছেন। আবার আক্ষেপের সুরে বলেছেন, একই কবিতায় “কিছু আছে জাত হারামি ঠান্ডা মাথার শুয়োর/পেলে শিশু নারী, পুরুষ কিংবা ছুড়ি পটায় খুব/মণ্ডা মিঠাই নামী দামি উপহার পরীক্ষার নম্বর/আরো কতো কি অফার প্রেমের সাগর সাজে/নয়তো নিশি দরবেশ কিংবা জীবন্ত ভগবান,,,” অসাধারণ সব লাইন। সমাজের কোথায় কোথায় অসঙ্গতি গুলো আছে কবি তার লেখায় চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছেন। দু চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন আরো কিছু, “বিদ্যালয়ে শিক্ষাগুরু, ধর্মশালায় ধর্মগুরু/চিকিৎসালয়ে ডাক্তার বাবু আশ্রয় চাইলে/পুলিশ মশাই, কমিশনার সমাজপতি/কোর্ট কাচারির বিচারপতি সব একসাথে/প্রেমিক সেজে রয় ওঁৎ পেতে,,,,” বাস্তবতার ভয়ংকর এ দিক গুলো উঠে এসেছে কবির লিখনিতে।

কবি আবার তার সমকালীন কবিদের জন্যেও বলেছেন একদম রমরমা কিছু কথা। যা অনেকের গাত্রদাহ হতে পারে “তুমি কবি না” কবিতায়,,, “সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াতে না পারলে/তুমি কবি না/জীবন থেকে পালিয়ে বেড়াতে ছন্দ লেখো/শব্দ ফেরি করো নৈশব্দের চোরা গলিতে/তুমি কবি না/তুমি শব্দ ছন্দের কারুকাজে/কুকুরের ঘাড়ে কেশর দিয়ে সিংহ গড়ো/তুমি কবি না,,,” এসব সত্যিই কবির বড় অসাধারণ গাঁথা। জ্বলন্ত শব্দচয়ন যে কাউকে আকৃষ্ট করবে।
একজন কবি হৃদয়ে শুধু যে দ্রোহ থাকবে এমন নয় কবির হৃদয়ে প্রকৃতির প্রেম থাকে জাগতিক প্রেম থাকে। বিরহ থাকে, যেমন “প্রেম” কবিতায় চমৎকার বলেছেন কবি, ” জীবন তো এক পান পাত্র/পূর্ণ প্রেমের সুধা/আজীবন তারে পান করে/মিটে না প্রেমের ক্ষুধা/কেউ পান করে মধু হয়ে যায়/কারো তরে হয় বিষ,,, ” চমৎকার এক জীবন আলেখ্য কখনো প্রেম। কখনো আবার সে প্রেমেই বিরহ। জীবনের এ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা প্রবাহ উঠে এসেছে এ পংক্তিতে।
প্রকৃতি প্রেমের অনেক কবিতাই আছে এ বইয়ে যা পাঠককে প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে যাবে।
কবির “চন্দ্রভুক” কাব্য গ্রন্থে আধ্যাত্মিয় কবিতার ও স্থান পেয়েছে যা আধ্যাত্মিক এবং বাস্তবতার এক দারুন সংমিশ্রণ। যা কবির অন্য এক স্বত্ত্বার আবির্ভাব কে নির্দেশ করে। যেমন “আলো চাই হে জ্যোর্তিময়” কবিতায় তিনি বলেছেন, “আলো দাও হে জ্যোতির্ময়, নির্মল আলো/একটু রোদে শুকাই ছত্রাক ধরা পাউরুটি আমাদের বিবেক,,,,, ” একেবারেই ভিন্ন ধারার মৌলিক। বাংলা কাব্য জগতে এমন আধ্যাত্মিকতা ও বাস্তবতার উপমা সমৃদ্ধ শব্দের প্রয়োগ খুব কম কবিই আনয়ন করতে পেরেছেন।

সবকিছু মিলিয়ে পড়ার মতো একটা বই। পাঠক, এ বই কিনে ঠকবেন না। তবে বইটিতে প্রকাশক বানান রীতিতে এবং কবিতার স্তবক নির্মানে অবহেলার প্রমান দিয়েছেন। যতি চিহ্ন প্রয়োগ ও শব্দ ঝরে যাওয়া সমস্যা আছে। বইটি নির্মানে ট্যাবলয়েড না করে প্রমান সাইজ করলে আরো দৃষ্টি নন্দিত হতো। ভবিষ্যতে লেখক ও প্রকাশক কে এ ব্যাপারে আরো সচেষ্ট হতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.